মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব করিম উদ্দিন আহমেদ এর জীবন কাহিনী

19 August, 2019

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব করিম উদ্দিন আহমেদ।



লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার একজন আলোকিত মানুষ আলহাজ্ব করিম উদ্দিন আহমেদ। জন্মস্থানঃ গ্রাম- কাশিরাম,  ডাকঘর- করিমপুর,  উপজেলা- কালীগঞ্জ,  জেলা - লালমনিরহাট। জন্মসন- ১৯শে মার্চ ১৯২৩ সাল। তার পিতার নাম মৌলভী আছিম উদ্দিন আহমেদ, মাতার নাম নেছাবি বেওয়া।


তার জন্ম সাধারন কৃষক পরিবারে হলেও কর্মের গুণেই  অবস্থার দিনদিনপরিবর্তন ঘটে।১৯৪৫সালেপ্রথমব্যবসায় হয়তারহাতেখড়ি। কিছুদিন মাড়োয়ারীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাকুরী পরেস্বল্প-পুজির ব্যবসা তিনি শুরু করেন। নানা মহলের আস্থাভাজন  বিশ্বস্ততার কারনে কোলকাতা, ভৈরব, নারায়নগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ঝালকাঠি, খুলনা   সিলেট সহ বিভিন্ন জায়গায় তারপাটতামাকব্যবসা সম্প্রসারিত হয়েপড়ে।ফলেএলাকায় একজনবিত্তশালী সংবেদনশীল মানুষে  পরিনত হন তিনি।


তার প্রাথমিক শিক্ষা মদনপুর বৈরাতীর নিলাম্বর পন্ডিতের পাঠশালায়। পরে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার অন্তর্গত চিলাখাল পাইকান মাদ্রাসা থেকে তিনি খারিজি পাশ করে পাকুরিয়া শরীফ মাদ্রাসায় ভর্তি হন। অবশেষে তুষভান্ডার উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনি পর্যন্ত তিনি পড়াশুনা করেন।


১৯৫৪ সালে ইউনিয়ন বোর্ডে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে জনসেবায় আত্ম নিয়োগ করেন। একনাগাড়ে ১৬ বছর তিনি ইউনিয়ন বোর্ডে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক পূর্ব পাকিস্তান আমলে কালীগঞ্জে একটি উন্নয়ন পরিষদ গঠন করা হয়। তিনি এই পরিষদের সেক্রেটারি মনোনিত হন এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডে অবদানের জন্য গভর্নর পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৭০ সালে তিনি সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের   সদস্য নির্বাচিত হন।করিমউদ্দিন আহমেদতরুনবয়সেইভারতছাড়আন্দোলনে মুকুন্দ  দাসের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। তিনি  আন্দোলনের ভলান্টিয়ার হিসেবে তুষভান্ডার বাজারে খাজনা বন্ধ করতে গেলে গ্রেফতার হয়েছিলেন মুলতঃগরীব-দুঃখী মানুষের পাশেথেকেতাদেরস্বার্থই তিনিউপলব্ধি করেছেন। ১৯৫২সালেরভাষাআন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তারইপ্রেরণায় প্রথমশহীদমিনার “ চিরঞ্জীব কালীগঞ্জ নির্মিত হয়। তিনি ১৯৫৯ সালে কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠাকালের প্রথম সভায় তিনি বলেছিলেন-“ হাজার   বক্তৃতার চেয়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করলে বক্তব্য পরিস্কার হয়। শিক্ষার সাগরে অনেক বড় বড় জাহাজ ভাসানো হয়েছে। আজ আমি এক টুকরো কাঠ ভাসালাম, কারো উপকার হবে ভেবে ভাসাই নাই। মনের আনন্দে ভাসালাম। প্রাণের তাগিদে ভাসালাম, লাভ হলো কিনা ভবিষ্যতেই বলবে।“  ১৯৭২ সালে করিম উদ্দিন পাবলিক কলেজ (বর্তমানে এটি সরকারি) ১৯৭৩ করিম উদ্দিন সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়,  ১৯৭৩সালেকরিমপুর নেছারিয়া দাখিলমাদ্রাসা এতিমখানা এবং১৯৮৬সালেসুন্দ্রাহবি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেশিক্ষা ক্ষেত্রে তারবক্তব্য বিষয়কে পরিষ্কার করেগেছেন। ১৯৬৩সালে “ করিমপুর  ডাকঘরপ্রতিষ্ঠা করেঅত্রএলাকার ডাকযোগাযোগের সূচনাকরেন।এছাড়াও এলাকায় অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা  দাতা হিসাবে স্মরনীয় হয়ে আছেন তিনি।


মুক্তিযুদ্ধের সময় করিম উদ্দিন আহমেদ কালীগঞ্জ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সাবে ইপিআর,  আনসার  পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তিনি মুক্তিবাহিনী গঠন


মন্তব্য লিখতে লগইন অথবা রেজিস্ট্রেশন কর