উনিশ নয় উনিশের কথা

26 September, 2019

Culturer Program



স্মৃতিতে থাকবে গাঁথা

সময় চলে যায়
রেখে যায় স্মৃতি
মানুষ মরে যায়
রেখে যায় কৃতি

পৃথিবী চলমান । পৃথিবী তার নিজ গতিতে চলতে থাকে । দিনের পর আসে যায় , মাসের পর বছর বছরের পর যুগ । একসময় তা হারিয়ে যায় কালান্তরে । আমাদের জীবনের হিসাবের খাতায় বেড়ে যায় একটা দিন ,  এক একটা মাস , এক একটা বছর । আমরা ভূলে যাই সুন্দর সুন্দর দিনগুলোর কথা । কিন্তু আমাদের জীবনে এমন কিছু দিন আসে যেগুলো ভোলার মতো নয় ।
তেমনি একটি দিন উনিশ নয় উনিশ এই দিনটিকে স্বরনীয় করে রাখার জন্য আমাদের স্কুলের কতৃপক্ষ একটি বনভোজনের আয়োজন করেছিল । এই বনভোজনেটি আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল । এই বনভোজনে সব শ্রেনীর শিক্ষাথীরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছিল । এ দিনটিতে আমরা সবাই মিলেমিশে বিভিন্ন বিষয়ের উপর আমাদের প্রতিযোগীতা ও পুরস্কারের ব্যবস্থাও ছিল । বিভিন্ন দলের মধ্যে আমাদের দলটির নাম ছিল স্বপ্নখেঁচর ।

বনভোজনের সময়টা ছিল শরৎকাল
শরৎ মানে – আকাশে সাদা মেঘ
শরৎ মানে – সূর্যের লুকোচুরি
শরৎ মানে – সাদা সাদা কাশফুল


এরকম শরৎ এরই একটি দিন ছিল উনিশ নয় উনিশ । এই দিনের সকালনেলাটা ছিল খুর সুন্দর । সকালে র্পূব দিকের সূর্যের মিষ্টি রোদে চারদিকের প্রকৃতি  যেন নেচে উঠছিল । এ রকম একটি দিনে আমরা স্বপ্নখেঁচর দলের সদস্যরা সকাল ১০ টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম বিদ্যালয়ে । সবার গায়ে রঙিন পোশাক মনে হচ্ছিল সবাই যেন মেলায় ঘুরেই গেছে । আমরা সবাই বনভোজনের সব কাজ করা শুরু করে দিলাম । আমরা স্বপ্ন খেচঁর দলের সদস্যরা বিদ্যালয়ের মাঠটি পরিষ্কার করে আমাদের কাজকর্ম শুরু করে দিলাম । সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছিলাম । কেই রান্না করছিল , কেউ রান্নার সামগ্রী জোগার করছিল , কেউবা তাবু সাজাচিছল । সবাইকে দেখে মনে হচ্চিল এক ঝাক মৌমাছি যেন একসাথে মৌচাক তৈরী করছে । সকাল ১১ টার মধ্যে আমাদের সব কাজকর্ম শেষ হলো । তারপর শুরু হলো আমাদের দলীয় প্রতিযোগিতা । এই দলীয় প্রতিযোগীতার মধ্যে ছিল নাচ গান একক পরিবেশনা । একক পর এক সব দল দেখিয়ে দিল তাদের অসাধারণ সম্পাদনা । আমরাও প্রতিযোগীতা অংশগ্রহন করেছিলাম । দুপুর ২টা পযন্ত চললো আমাদের এই দলীয় প্রতিযোগীতা । আমরা একটি গরীব শিশুকে বস্ত্র প্রদানের মাধ্যমে দিনটিকে আরও আকর্শনীয় করে তুলেছিলাম । আমাদের এই কর্মে মুগ্ধ হয়ে সবাই হাততালি দিচ্ছিল । আমাদের দলীয় প্রতিযোগীতার সকল কাজকর্ম শেষ হওয়ার পর আমাদের দুপুরের খাবার জন্য কিছু সময় দেওয়া হয়েছিল । তখন সবাই একেবারে ক্লান্ত সবাই ক্ষুধার্তও ছিল । সেই সময় আমরা শুনতে পেলাম খিচুড়ির ঘ্রান । খিচুর ঘ্রানে সবার ক্ষুধাটা যেন আরও বেড়ে গেল । সবাই হাত মুখ ধুয়ে বসে পড়লাম খেতে। সবাই একেবারে চেটেপুটে পেটপুড়ে খিচুড়ি খেলাম । কি স্বাদই না ছিল খিচুড়িটার । সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে খাওয়ার মজাটাই আলাদা । খাওয়া দাওয়া শেষ হওয়ার মজাটাই আলাদ । খাওয়া দাওয়া শেষ হওয়ার কিছুক্ষন পর শুরু হলো আমাদের দলীয় প্রতিযোগীতার ফলাফল প্রকাশের পালা । সবাই নিজ নিজ তাবুর ভিতরে বসে ফলাফল শোনার অপেক্ষায় ছিলাম । আমাদের প্রধান শিক্ষক যখন ফলাফলের কাগজটা হাতে নিল তখন সবাই খুর জোরে জোরে চিৎকার করছিল এবং হাততালি দিচ্চিল । মনে হচ্ছিল সবাই নিজের বিজয়ী হওয়ার খরটা যেন আগে থেকেই জানে । প্রধান শিক্ষক মাইকেই মধ্যে চিৎকার করে ফলাফল ঘোষনা করলো । ফলাফল অনুযায়ী বিজয়ী দলকে পুরষ্কারও প্রদান করা হলো । আমরাও একটা পুরস্কার পেয়েছিলাম । পুরস্কার পেয়ে সবাই একেবারে খুশিতে আত্নাহারা। আনন্দ আর মজার মধ্যে দিয়ে আমাদের দিনটি কেটেছিল । আনন্দের মধ্যে দিয়ে আমরা অনেক কিছু শিখেছি । অনেক জ্ঞান অর্জন করেছি কীভাবে মিলেমিশে কাজ করতে হয় , নিজের কাজ নিজে করার আনন্দ কীরকম কীভাবে শৃঙ্খলা বজায় রাখা যায় এরকম শিক্ষা অর্জন করেছি । এই দিনটি আমাদের কাছে কোন সাধারন দিন ছিল না । আমরা এ দিনটিকে সারাজীবন আমাদের স্মৃতিতে ধরে রাখার চেষ্টা করব।


মন্তব্য লিখতে লগইন অথবা রেজিস্ট্রেশন কর